3

জাতিসংঘ কর্তৃক পর্যবেক্ষক মোতায়েন সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি

 

শিরোনাম সূত্র তারিখ
জাতিসংঘ কর্তৃক পর্যবেক্ষক মোতায়েন সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশ সরকার ৩১জুলাই,১৯৭১

 

বাংলাদেশ প্রেস বিজ্ঞপ্তি

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মিশন

৯,সার্কাস এভিনিউ,কলকাতা -১৭

(স্বীকৃতি ছাড়া অথবা স্বীকৃতি দিয়ে পুনুরউৎপাদন করা যেতে পারে)

______________________________________________________________________________________________

নং.PR/30.মুজিবনগর

৩১জুলাই,১৯৭১

পাকিস্তানের জাতিসংঘের প্রতি ধাবিত হওয়া নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

খন্দকার মোশতাকের আহমেদের( পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী) লক্ষ্যে পাকিস্তানের পদক্ষেপ অঙ্কিত হয়েছিল বাংলাদেশ ইস্যুকে ভারত পাকিস্তান ইস্যুতে রূপান্তরিত করতে, তিনি বলেন যে এটা ভুল মনোভাব এবং এটি কখনোই বিশ্বের এই অংশে শান্তি বয়ে আনবেনাহ। তিনি বলেন, ইঙ্গিতগুলো খুবই পরিষ্কার যে, পাকিস্তান, শেষ মুহুর্তে তাদের ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করছে, এবং জাতিসংঘের আশেপাশে দ্রুত গতি বাড়াচ্ছে যেন বাংলাদেশে সৈনিকদের হাত থেকে নিশ্চিত পরাজয় এড়াতে পারে। বাংলাদেশের মাটিতে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষেক পাঠায়ি এটাকে ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ইস্যু তৈরি করতে চায় যেটি নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের একটা বেপরোয়া মনোভাবের লক্ষণ। বাংলাদেশের সরকার আবারো বিশ্বের সকল জাতির আকর্ষণ আকৃষ্ট করছে যে, বর্তমানে বাংলাদেশ একটা স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। কিছু মানুষের জন্য এটা মানা কষ্টকর কিন্তু এটাই হচ্ছে সত্যি। ২৫শে মার্চ রাত হতে বাংলাদেশের মাটিতে কি হয়েছে সবই ইতিহাসের পাতায় দিনের পর দিন,মাসের পর মাস লিখা হয়ে গেছে। জাতিসংঘের ভূমিকা তখন থেকে সেই সময়কাল পর্যন্ত কি ছিল সবারই জানা। জাতিসংঘের ক্ষমতা ছিল এবং সম্মতি ছিল বিশ্বের সকল ক্ষতিগ্রস্হ মানবতার জন্য ভালো কিছু প্রেরণ করা কিন্তু এটির উপকারিতার সুযোগ পাইনি। বাংলাদেশের দুর্ভোগ সহ্য করা জনগণ তাদের দুর্ভোগ প্রাথমিক ভাবে জয় করতে পেরেছে এবং তারা সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে। কি এমন করল জাতিসংঘের কার্যনির্বাহীদের যে এখন ঘুম ভাঙ্গল তাদের উদাসীন ঘুম থেকে? বাংলাদেশে যোদ্ধাদের ধমানোর যেকোন প্রচেষ্টাকে এখন থেকে গুড়িয়ে দেওয়া হবে।

 

যেভাবে আমাদের সাহসী যোদ্ধারা লক্ষাধিক জীবন এবং রক্ত ও কান্নার নদী বয়ে দিয়ে তাদের বিজয়ের রাস্তা তৈরি করছে, আমরা কখনোই কাউকে এই ত্যাগকে খর্ব করতে দিবনা। বাংলাদেশের মাটির উপর ৭কোটি বাঙ্গালীই শুধুমাত্র ক্ষমতা গঠন করবে। জাতিসংঘের ত্রাণ ও পূর্ণবাসস্থান বিভাগের হাই কমিশনার শরণার্থীদের অবস্থার একটি দৃশ্য নেন। তিনি একটি উপশমকারী ব্যবস্থা নিতে চান যখন এটির জন্য গুরুতর অস্ত্রপাচারের প্রয়োজন। বলা যায় এই দ্বারা তিনি একটা ভালো পজিশনে থাকতে পারতেন হয়ত যদিও তার উপস্হিতিতে এবং প্রতিশ্রুতিতে শরণার্থীরা ঘরে ফিরতে অনুপ্রাণিত হয় যেহেতু ইন্ডিয়াতে তখনও অসংখ্য পরিমাণ শরণার্থী ছিল। আমরা অনুভব করি যে এই লাইনে আর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা অবশ্যই নেওয়া হবে। সে জন্য আমরা জাতিসংঘকে ঢেকে শরণার্থী সমস্যা সমাধানে তাদের নিরর্থক প্রচেষ্টা বন্ধের কথা বলি। শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারেই পারে শরণার্থীদের ঘরে ফেরাতে। জাতিসংঘ ও তার অধিভুক্ত সংস্থা ঢেলে সাজানো এবং তার ভূমিকা যৌক্তিকীকরণের আবশ্যক এবং যেকোন প্রকারে কোন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর পরিকল্পনা করতে, বাংলাদেশ-পাকিস্তান ইস্যু সত্য বলে স্বীকার করতে ভারত-পাকিস্তান ইস্যুর পরিবর্তে। এই মনোভাব কখনোই বিশ্বের এই অংশে শান্তি আনবেনা। বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় পদ্ধতিতে একার পক্ষে কথা বলতে হবে তাদের ভাগ্য নির্ধারণকারী শুধুমাত্র জনগণের জন্য। একটা মিথ্যা আহ্বান,অধিকতর বিপর্যয় এবং সমালোচনা এড়িয়ে চলে আমাদের পৃথিবীকে নিশ্চিত করতে হবে যে বাংলাদেশ সরকার শান্তির রাস্তা তৈরি করতে প্রস্তুত, মূল ইস্যু গুলোকে ধুয়াশা,অবহেলা করেনা।