14

তাজউদ্দীন কর্তৃক মুক্ত এলাকা গঠন ও কমান্ডার নিয়োগ

 

শিরোনাম সূত্র তারিখ
তাজউদ্দীন কর্তৃক মুক্ত এলাকা গঠন ও কমান্ডার নিয়োগ অমৃতবাজার পত্রিকা ১৫ এপ্রিল ১৯৭১

 

অমৃতবাজার পত্রিকা. এপ্রিল ১৫, ১৯৭১

তাজউদ্দীন কর্তৃক মুক্ত এলাকা গঠন কমান্ডার নিয়োগ

 

 

জনাব তাজউদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বুধবার তার দেশে মুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করেন এবং নিজ নিজ স্থানীয় কমান্ডার যারা সেখানে অপারেশনের দায়িত্বে থাকবে তাদের মনোনীত করেন।

 

ফ্রী বাংলা বেতার কেন্দ্রে জনাব আহমেদ একটি সম্প্রচারে বলেন যে মেজর খালেদ মোশাররফ সিলেট ও ​​কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের দায়িত্বে থাকবেন যিনি  পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। চট্টগ্রাম- নোয়াখালী এলাকায় EBR এর মেজর জিয়াউর রহমান দায়িত্ব পালন করবেন। চট্টগ্রামে সীমিত স্থানে প্যাকেট আকারে শত্রুদের অবস্থান।

 

EBR এর মেজর সাইফুল্লাহ ময়মনসিংহের টাঙ্গাইল এলাকার দায়িত্বে থাকবেন।  ইপিআর এর মেজর এম এ ওসমান দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিমুক্ত এলাকায় কমান্ড গ্রহণ করবেন।

 

জনাব আহমেদের  মতে শত্রুরা এখন যশোর ক্যান্টনমেন্ট ও খুলনা শহরের কিছু অংশে সীমাবদ্ধ । উত্তরাঞ্চলে ইবিআর এবং ইপিআর একত্রিত হয়ে রংপুর ও সৈয়দপুর শত্রু অবস্থানের খারাপ একটি জায়গা দখল করে।

 

তিনি বলেন, একটি পূর্ণাঙ্গ অপারেশন বেস স্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার এর পক্ষ থেকে যা সমস্ত দেশের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।  একটি অন্তর্বর্তীকালীন রাজধানী পশ্চিম জোনে অবস্থিত । পূর্ব অঞ্চলের জন্য পূর্ণ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিলেটের কুমিল্লা জোনের আঞ্চলিক ইউনিট দেয়া হয়েছে।

 

জনাব আহমেদ বাঙ্গালীদের গৌরবময় সংগ্রামে সফলতার জন্য বাংলাদেশের বীর জনগণকে অভিনন্দন জানান। যা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত।

 

তিনি বলেন, জনগণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহ যা কিছু আছে তাই দিয়ে তারা শত্রু প্যারাট্রুপারদের, কমান্ডো এবং এজেন্ট দের মোকাবিলা করবে। তারা রাস্তা, জলপথ কেটে বুবি ট্র্যাপ সেট করবে। এমনকি অনিয়মিতরাও একটি সুশৃঙ্খল নিয়মিত বাহিনীর মত লড়াইয়ের শক্তি হিসেবে কাজ করা উচিত বলে জানান তিনি।

 

তিনি বলেন এখন এমন একটি সময় যখন দেশের সাড়ে সাত কোটি লোকের দল মত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সেইসাথে প্রশাসনিক ও পুনর্গঠন কাজের জন্য ঐক্য বদ্ধ হতে হবে। ভয় পেয়ে পিছু হটলে এখন আর চলবে না।

 

জনাব আহমেদ বলেন দৃশ্য যুদ্ধকালীন জরুরি অবস্থার কথা মাথায় রেখে দেশবাসীকে পরম কঠোরতার সাথে নিরীক্ষা ও মজুদ এবং কালোবাজারি এড়িয়ে চলতে হবে । অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার চর্চা করতে হবে।

 

জনগণের চূড়ান্ত বিজয় এর উপর আস্থা স্থাপন করে জনাব আহমেদ বলেন শত্রুদের যার সরবরাহের লাইন কার্যত বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং তাদের মনোবল ধ্বংস হয়েছে ।

 

তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির নোট গ্রহণ করেছে।  এটা এখন একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা শীঘ্রই বিদেশী দেশ সফর করবে এবং কূটনৈতিক স্বীকৃতি ও মনোযোগ চাইবার জন্য।

 

বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানের  ধ্বংসাবশেষের উপর নতুন জাতির পুনর্গঠন এবং পুনর্নির্মাণ কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাবে। (পিটিআই)।