3

বাংলাদেশ সরকারের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যয় বরাদ্দের হিসাব চিঠি

শিরোনাম সুত্র তারিখ
বাংলাদেশ সরকারের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যয় বরাদ্দের হিসাব সংক্রান্ত চিঠি বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট ডিভিশন ১৪ নভেম্বর, ১৯৭১

 

বাংলাদেশ সরকার  ১৪ নভেম্বর ১৯৭১

 

গোপনীয়                          সবচেয়ে জরুরী

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

(মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ)

 

মেমো নং…../ক্যাব                    তারিখ, ১৪ নভেম্বর,১৯৭১।

 

বরাবর

জনাব ক. আ. জামান,

সচিব,

অর্থ মন্ত্রণালয়।

 

বিষয়ঃ অক্টোবর, ১৯৭১ থেকে নভেম্বর, ১৯৭১ সময়কালের বাজেট।

 

রেফঃ আপনার মেমো নং FIN/39/71/430 তারিখ ১৩.১১.৭১

 

সোমবার(১৫ নভেম্বর, ১৯৭১) অনুষ্ঠেয় মন্ত্রীসভার মিটিংয়ের আলোচ্যসূচিতে বাজেটকে অন্তর্ভুক্তির সময়, প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন যে, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির কাছে বাজেটের কাগজপত্র পেশ করার আগে, প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীবর্গ, আমাদের নিশ্চিত করা উচিত যে সরকারের সব মন্ত্রনালয়, বিভাগ ও সংস্থার দাবি বাজেটে প্রতিফলিত হয়। বাজেটের সারাংস বিবেচনা করলে দেখা যায় যে মন্ত্রনালয়, সংস্থাগুলোর বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রীসভা ও প্রধানমন্ত্রীর করা আগের কিছু বরাদ্দ ও অনুমোদন বাজেটে উল্লেখ করা হয়নি। আমার মনে হয় অক্টোবর ১ থেকে শুরু হওয়া সময়সীমার মধ্যে আগের অপরিকল্পিত অনুমোদন গুলোও বাজেটে তুলে ধরা উচিত। আমি নিম্নক্ত ঘটনা গুলো উল্লেখ করতে পারিঃ

 

(ক) ৭ অক্টোবর, ১৯৭১ অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে তারা ডিফেন্স মেডিকেল সার্ভিসের(স্বাস্থ্য) জন্য ১০০০০০/০০(দশ লাখ) টাকার বরাদ্দ অনুমোদন দেন (সারাংস অফিস মেমো নং 246(6)/ Cab. তাং অক্টোবর ২৫, ১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।

 

(খ) একই বৈঠকে মন্ত্রীসভা সিভিল মেডিকেল সার্ভিস স্বাস্থ্য এর জন্য ৫,৫০,০০০/০০টাকার আর একটি বরাদ্দের অনুমোদন দেন।(সারাংস অফিস মেমো নং 247(4) Cab.  তাং ২৫.১০.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।

 

(গ) মন্ত্রীসভা ৩০শে অক্টোবর ১৯৭১ এ অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে শহিদদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি ও পঙ্গু সৈনিক ইত্যাদির জন্য ৫০,০০০ টাকার অনুমোদন দেন। সারাংস অফিস মেমো নং 294(3)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে।

 

(ঘ) মুক্তিবাহিনীর শীত বস্ত্রের জন্য মন্ত্রীসভা ৩০শে অক্টোবর, ১৯৭১ অনুষ্ঠিত বৈঠকে ৭,০০,০০০ (সাত লাখ) টাকা সমমুল্যের একটি অনুমোদন দিয়েছিল। (সারাংস অফিস মেমো নং 294(5)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।

 

(ঙ) ৩০শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত একই বৈঠকে মন্ত্রীসভা যুব ও রিসেপশন ক্যাম্পের ছেলেদের জন্য শীত বস্ত্র সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন। (সারাংস অফিস মেমো নং 294(5)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।

 

(চ) ৩০শে অক্টোবর, ১৯৭১ মন্ত্রীসভার এক সিদ্ধান্তে জেসিও এবং অন্যান্য পদের ভাতা বাড়ানো হয় যা ১লা নভেম্বর ১৯৭১ থেকে কার্যকর। (সারাংস অফিস মেমো নং 297(5)/Cab. তাং ১.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।

 

(ছ) ১লা নভেম্বর, ১৯৭১ এ অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে শীতবস্ত্রের জন্য অগ্রীম অর্থ অনুমোদন এবং ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের জন্য বিনামুল্যে উলের সয়েটার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।(সারাংস অফিস মেমো নং 316(2)/Cab. & 313 (2)/Cab. তাং ৩.১১.১৯৭১ এর মাধ্যমে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে)।

 

(জ) ৭ নভেম্বর ১৯৭১ এ প্রধানমন্ত্রী সাংগঠনিক সেট-আপের অনুমতি দেন এবং পরিকল্পনা বিভাগের মাধ্যমে তিন মাসের জন্য ১,০০,০০০(এক লাখ) টাকার বাজেট পেশ করা হয়।এটা বুধবার(১০.১১.৭১) সেক্রেটারি কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয় এবং সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

 

আমার মনে হয় উপরে উল্লেখিত (ক), (গ), (ঘ) এবং (চ) অনুচ্ছেদের বিষয় গুলো প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এই বিষয়গুলো হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-শিরোনামে দেখাতে হবে অথবা প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর নামে একটি আলাদা বিষয় হিসেবে দেখাতে হবে। অবশ্যই, প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিজেদের আবর্তনশীল ব্যয়ের জন্য ৩৩,০০০/০০ টাকার দাবি খুব বেশি কিছু যোগ করবে না।

 

উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে এবং প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষনের আলোকে মন্ত্রনালয় ও সংস্থার সেই সকল চাহিদা বাজেটে উল্লেখ করতে হবে। আমি আপনাকে অনুরোধ করব বাজেট পুনর্গঠন করতে এবং সেটি আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে অর্থাৎ সোমবার, ২২শে নভেম্বর, ১৯৭১এ পেশ করুন।

 

(এইচ. টি. ইমাম)

মন্ত্রীসভা সচিব

১৪.১১.৭১

 

 

 

মেমো নং ……. (৩)/ক্যাবিনেট                       তারিখ ১৪ই নভেম্বর, ১৯৭১

 

কপি পাঠানো হয়েছেঃ ১. মৌখিক নির্দেশাবলীর প্রেক্ষিতে তথ্যাবলীর সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

 

২. অর্থমন্ত্রনালয়।

 

৩. প্রতিরক্ষা সচিব।